ঢাকা , শনিবার, ০১ নভেম্বর ২০২৫ , ১৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
​নিয়ামতপুরে মাছ ধরতে গিয়ে প্রাণ গেল কৃষকের রাণীশংকৈলে জাকের পার্টি ছাত্রফ্রন্টের উদ্যোগে সাংগঠনিক মতবিনিময় সভা পত্নীতলায় সন্ত্রাসী হামলার বিচারের দাবিতে বিএনপি’র মানববন্ধন রেলসেতুর নিচ থেকে নারীর লাশ উদ্ধার নিয়ামতপৃরে বৃষ্টিতে আমন ধানের ক্ষতি, শঙ্কায় কৃষক মান্দায় হঠাৎ বৃষ্টিতে আমনসহ সবজির ব্যপক ক্ষতি শুধু নিপীড়িত মানুষের জন্য নয়, সমবায় সবার জন্য, বিভাগীয় কমিশনার সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত রাণীশংকৈলে জাতীয় সমবায় দিবস পালিত শেষ হলো আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলা তানোরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসিয়ে বসে আনতে পুকুরে মাছ চুরির নাটক তানোরে কার্তিকের কান্নায় কৃষকের স্বপ্ন ভঙ্গ নরসিংদীর রায়পুরায় জমি নিয়ে বিরোধ, চাচার হাতে দুই ভাই খুন গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিক সুরক্ষায় কার্যকর ব্যবস্হা নেওয়ার দাবি আরইউজের প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার কিশোরের মৃত্যু রেললাইনে হাঁটু পানি, ২ ঘণ্টা বিলম্বে ছেড়েছে বনলতা এক্সপ্রেস মহানগর বিএনপি’র  সভাপতি মামুন, সাধারণ সম্পাদক রিটন ও  সাংগঠনিক সম্পাদক মিলু চরের ত্রাস কাকনবাহীনি’র বিচার দাবিতে বাঘায় মানববন্ধন জমির ভাগ নিতে বাংলাদেশি এনআইডি বানালেন ভারতীয় নাগরিক সাগর-রুনি হত্যার বিচার ও নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নের দাবি

জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেল ফুলবাড়িয়ার লাল চিনি

  • আপলোড সময় : ২৭-০৮-২০২৫ ০৫:৪৪:৪৩ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৭-০৮-২০২৫ ০৫:৪৪:৪৩ অপরাহ্ন
জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেল ফুলবাড়িয়ার লাল চিনি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেল ফুলবাড়িয়ার লাল চিনি
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় আখের রস থেকে হাতে তৈরি লাল চিনির ঐতিহ্য প্রায় আড়াইশ বছরের। মিহি দানার পাউডার জাতীয় এ চিনি শরবত, পিঠা বা মিষ্টান্ন সব কিছুতেই ব্যবহার করেন স্থানীয়রা। এই চিনি তৈরির প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক এবং শতভাগ বিশুদ্ধ।

কোনো ধরনের যন্ত্রের ব্যবহার ছাড়া অর্গানিকভাবে তৈরি করা এ চিনির কদরও বেশ। এ উপজেলায় উৎপাদিত চিনি প্রতিবছর প্রায় শতকোটি টাকায় বিক্রি হয় বলে জানায় কৃষি বিভাগ। ঐতিহ্যবাহী লাল চিনি এবার ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে ফুলবাড়িয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ বলেন, ওয়েবসাইট চেক করে আজ আমরা জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধনের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি। ২০২৪ সালের ১১ জুলাই ফুলবাড়িয়ার লাল চিনির জিআই স্বীকৃতির জন্য আবেদন করা হয় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে।

তিনি আরও বলেন, আবেদন নম্বর ছিল জিআই-৮৮। গত ২৭ মে শিল্পমন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর থেকে জার্নালে প্রকাশ করা হয়। আর কোনো পক্ষের দাবি আছে কী না সে জন্য জার্নালটি প্রকাশ করা হলেও কারও দাবি না থাকায় সব প্রক্রিয়া শেষে আমরা স্বীকৃতি পেয়েছি। সনদের জন্য সরকার নির্ধারিত ফি জমা দেওয়া হয়েছে৷

কৃষি বিভাগ জানায়, উপজেলার বাকতা, কালাদহ ও রাধাকানাই ইউনিয়নের প্রায় ২০টি গ্রামের কৃষক-কৃষানি আখ উৎপাদন ও চিনি তৈরির কাজ করেন।

স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লাল চিনি তৈরির একমাত্র কাঁচামাল হলো আখ। আখের রস আগুনে জ্বাল দিয়ে লাল চিনি তৈরি করা হয়। আখ মাড়াইয়ের আগে চাষিরা লাল চিনি তৈরির জন্য জ্বালঘর তৈরি করেন। লাল চিনি তৈরির জন্য প্রথমে আখ জমি থেকে সংগ্রহ করে তা পরিষ্কার করে যন্ত্রচালিত আখ মাড়াই কলের সাহায্যে আখ থেকে রস বের করা হয়।

জ্বালঘরের চুলায় অনেকগুলো লোহার কড়াই বসানো হয়। তারপর প্রথম কড়াইয়ে পরিমাণমতো কাঁচা রস দিয়ে জ্বাল দেওয়া শুরু করা হয়। জ্বাল দেওয়ার আধা ঘণ্টা পর এক কড়াই থেকে আরেক কড়াইয়ে, তারপর এভাবে সবশেষ জ্বাল দেওয়া রস ঘন হলে চুলা থেকে নামিয়ে কাঠের তৈরি মুগুর দিয়ে বারবার ঘর্ষণ করে অ-দানাদার বাদামি রঙের লাল চিনি তৈরি করা হয়।

যতক্ষণ না পাকা রস শুকনো ধুলার মতো আকার ধারণ করে, ততক্ষণ পর্যন্ত ঘুঁটতে থাকে। আখের গুণগত মান খারাপ হলে ধুলার মতো না হয়ে গুটি গুটি আকার ধারণ করে। ধুলার মতো বা গুটির মতো যা-ই হোক, ফুলবাড়িয়ার ভাষায় এটিই হলো ঐতিহ্যবাহী লাল চিনি। দেখতে ধূসর বাদামি বা হালকা খয়েরি হলেও সাদা চিনির বিপরীতেই হয়তো ‘লাল চিনি’ নামকরণ করা হয় একে। চিনি হওয়ার পর তা রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করা হয়। জমিতে আখ চৈত্র মাসে লাগানো হয়। আখ মাড়াই শুরু হয় পৌষ মাসের শুরু থেকে। দীর্ঘ এক বছরে একটি ফসল হয়। আড়াই মাস সময়ের মধ্যে এই চিনি তৈরি হয়।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ২০২৫ সালে ৬৫০ হেক্টর জমিতে আখ চাষ হয়। এর মধ্যে ৯০ শতাংশ জমিতে দেশি জাতের আখের আবাদ হয়। বাকি জমিতে ঈশ্বরদী-৪১ ও ঈশ্বরদী-৪২ জাতের আখ হয়। এক হেক্টর জমি থেকে প্রায় ৮ মেট্রিক টন লাল চিনি উৎপাদন হয়। লাল চিনি গড়ে ৮ হাজার টাকা মণ বিক্রি হয়। এ বছর প্রায় ১০৮ কোটি টাকা লাল চিনি বিক্রি করে আয় করে কৃষকরা। এক মেট্রিক টন আখ থেকে প্রায় ৩২ হাজার লিটার রস হয়। চার কেজি রস থেকে এক কেজি লাল চিনি বের হয়।

বিভাগটি আরও জানায়, লাল চিনিটি সম্পূর্ণ ম্যানুয়েল পদ্ধতিতে তৈরি হয়। চুলা পরিবর্তনের মাধ্যমে রসগুলো জাল করে, অনবরত হাতের মাধ্যমে ঘূর্ণায়মান করে চিনি উৎপাদন করা হয়। এটি সম্পূর্ণ অর্গানিক বলা যায়। যার কারণে, এটি শরবত বা মিষ্টান্ন হিসেবে যখন পান করা হয় তখন কাঁচা রসের ফ্লেভার পাওয়া যায়। ফলে দেশে ও বিদেশেও এর চাহিদা রয়েছে। এ চিনিকে যারা চেনেন তারা অনেকেই অনলাইনের মাধ্যমে বিদেশে নিচ্ছেন।

স্থানীয় চিনি ব্যবসায়ী মো. আবদুল মজিদ বলেন, জিআই স্বীকৃতি পাওয়ায় চিনির চাহিদা আরও বাড়বে। তাদের ব্যবসার আরও বিস্তৃতি ঘটবে বলে আশা করছি।

ফুলবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, লাল চিনির জিআই স্বীকৃতির বিষয়টি আজ আমরা নিশ্চিত হয়ে সনদের জন্য টাকা জমা দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছি৷ এ স্বীকৃতিতে উচ্ছ্বসিত এ অঞ্চলের মানুষ৷ এ স্বীকৃতি এ অঞ্চলের কৃষি অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিয়োগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Rajshahir Somoy

কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য

শুধু নিপীড়িত মানুষের জন্য নয়, সমবায় সবার জন্য, বিভাগীয় কমিশনার

শুধু নিপীড়িত মানুষের জন্য নয়, সমবায় সবার জন্য, বিভাগীয় কমিশনার